আজব তাই না? আমি কি সার্চ করেছি গুগলে সেটা ফেসবুক কিভাবে জানলো।ফেসবুক কি তাহলে আমার উপর নজর রাখছে? নাকি গুগল আমার তথ্য ফেসবুককে দিয়ে দিয়েছে?
আপনার সাথেও যদি এমনটি হয়ে থাকে এবং আপনার মনেও যদি এমন প্রশ্ন এসে থাকে তাহলে আজকের লেখাটি আপনার জন্য। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
আসলে আপনার ভিজিট করা সাইটে ফেসবুকের থার্ড পার্টি কুকি ছিল। আপনার সার্চ করা পণ্য ফেসুক কিভাবে জানলো সেটা বুঝতে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে কুকিজ (Cookies) সম্পর্কে। আমি কিন্তু কোন বিস্কুটের কথা বলছি না। আমি বলছি সেই মহান ব্যাক্তির কথা যিনি ফেসবুককে বলেছেন আপনার পছন্দ অপছন্দের কথা। ইন্টারনেটে কুকিজ সম্পর্কে আপনারা সকলেই হয়তো কোথাও না কোথাও দেখেছেন। যেকোনো ইন্টারনেট ব্রাউজারের মাধ্যমে কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার সময় হয়তো অ্যালাউ কুকিজ বা ডিলিট কুকিজ বা ডিসঅ্যাবল কুকিজ ইত্যাদি অপশন গুলো দেখে থাকবেন। কিন্তু আসলে এর মানে টা কি এবং কেন এটা দেওয়া হয়?
কুকিজ (Cookies) হলো আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজারের ক্যাশ মেমোরিতে সংরক্ষিত হওয়া কিছু ফাইল। এখন এই ফাইল গুলো আসে কোথা থেকে? দেখুন যখনই আপনি কোন কুকি এনাবল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন এবং আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজারে যদি কুকি এনাবল করা থাকে তবে সেই ওয়েবসাইট টি আপনার ব্রাউজার ক্যাশে কুকিজ ড্রপ করে দেয়। তখন এই কুকিজগুলো আপনার কম্পিউটারে সেভ হয়ে থাকে। ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের সময় সার্ভার থেকে আপনার ব্রাউজারে অবিরত পাঠানো প্যাকেট ডাটা, যা ব্রাউজার আবার সার্ভারে ফেরত পাঠায় ইন্টারনেট জগতে এই সকল প্যাকেট ডাটাকে cookies বলা হয়। ওয়েবসাইটের গঠন অনুসারে যখন আপনি সাইটে ফেরত আসবেন, সংশ্লিষ্ট ব্রাউজার এই সাইট সম্পর্কিত cookies ফেরত পাঠায় এবং এটি আপনার দেয়া তথ্য অনুযায়ী সাইটটিকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ঐ সাইটে কি কি আছে তা প্রদর্শন করতে অনুমতি প্রদান করে। কি মাথার উপর দিয়ে গেল? তাহলে আরেকটু সহজ করে দিচ্ছি।
মনে করুন আপনি Amazon, Alibaba, Aliexpress, Daraz বা Ebay এর মতো কোন ই-কমার্স সাইটে গেলেন বা কোন টিকিত বা হোটেল বুকিং এর সাইটে গেলেন। তো এইসব সাইট আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজারে তাদের প্রয়োজনীয় কুকিজ ড্রপ করে দেবে। এখন এই কুকিজ ড্রপের পর আপনি সেই সাইট গুলোতে গিয়ে কি কি প্রোডাক্ট সার্চ বা প্লেস করলেন বা কোন আইটেম বেশি সময় ধরে দেখলেন আর কোন আইটেম কম সময় ধরে, এই সমস্ত ডাটা গুলো আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজার কুকিজের মাধ্যমে সেই ওয়েবসাইট টির কাছে লাগাতার পাঠাতে থাকে। যাতে আপনি যদি পরবর্তীতে সেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন তবে সেই ওয়েবসাইট টি আপনাকে রেকমেন্ড রেজাল্ট দেখাতে পারে।
এছাড়াও সংশ্লিষ্ট ওয়েব সাইট গুলো গুগল, ফেসবুকের এর মতো অ্যাড প্লাটফর্মের এর মাধ্যমে আপনাকে আপনার পছন্দনীয় আইটেমের অ্যাড প্রদর্শন করতে পারবে।
মনে করুন আপনি গতবার অ্যামাজনে একটি ব্র্যান্ডের ঘড়ি সার্চ করেছিলেন এবং কুকিজের মাধ্যমে সেই ডাটা গুলো অ্যামাজনের কাছে চলে গেছে, এবার এখন যদি আবার অ্যামাজন ভিসিট করেন অথবা গুগল এ সার্চ করেন তবে আপনাকে আরো ঐরকম ঘড়ি দেখানো হবে । এমনকি আপনাকে একই প্রাইস রেঞ্জের মধ্যে আরো প্রোডাক্ট দেখানো হবে।
এভাবে ফেসবুক আপনার কুকিজ চেক করে সে সম্পর্কিত অ্যাড দেখায় আপনাকে। এখন আপনার মনে হতে পারে এটা তো ভালই।হ্যা অবশ্যই ভালো কিন্তু সমস্যা টা তখনি দাঁড়ায় যখন আপনি কোন অজানা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন এবং আপনার অজান্তেই তারা ম্যালিসিয়াস কুকি ইমপ্ল্যান্ট করে দেয়। অনেক সময় লক্ষ্য করলে দেখবেন একটা লিঙ্কে ক্লিক করলে সাথে সাথেই ৫-৬ টা অটোমেটিক ট্যাব ওপেন হয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঢুকে যায়। এখন আপনি তো জানেন না কোন ওয়েবসাইটে কি অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। এখন ঐ স্বয়ংক্রিয় ট্যাবে খোলা ওয়েবসাইট গুলো যদি আপনার ব্রাউজারে কোন থার্ড পার্টি কুকিজ প্লান্ট করে দেয় তবে আপনার সকল অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
আজ এ পর্যন্তই। দ্বিতীয় পর্বের জন্য এখানে ক্লিক করুন।
আজ এ পর্যন্তই। দ্বিতীয় পর্বের জন্য এখানে ক্লিক করুন।
ঘরেই থাকবেন, আপনি ঘরে থাকলে দেশ বাঁচবে, বাঁচবে দেশের মানুষ।
ধন্যবাদ।
Post a Comment
0Comments